জানাও ডেস্কঃ প্রথমে টস জিতে ফাইনালে বল করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। উইকেটের সুবিধা নিয়ে ভারতকে আটকে দেওয়া ছিল লক্ষ্য। শরিফুল-সাকিবরা দুর্দান্ত বোলিং করে সেই কাজটা দারুণভাবে করে। ভারতকে ১৭৭ রানে অলআউট করে দেয়। জবাব দিতে নেমে ভালো শুরু করে যুবারা। তুলে ফেলে কোন উইকেট না হারিয়ে ৫০ রান। কিন্তু এরপরই পথ হারায় যুবারা।
তামিম-জয়, হৃদয়-শামিমরা ফিরে যান একে একে। ওদিকে ইনজুরি নিয়ে উঠে যান ওপেনার পারভেজ জয়। ভারতীয় লেগ স্পিনার রবি বিষ্ণুর ঘূর্ণির কোন জবাব পাচ্ছিল না বাংলাদেশ যুবারা। দলকে ভরসা দিতে তাই ইনজুরি নিয়ে পারভেজ ইমনকে ক্রিজে আসতে হয়। তিনি মাঠে নেমে অধিনায়ক আকবর আলীকে সঙ্গ দিয়ে ম্যাচ বের করে আনার আভাস দেন। কিন্তু নিজের ৪৭ রানে শট খেলতে গিয়ে আউট হয়ে ফিরে যান এই ওপেনার।
কিন্তু দলকে পথ হারাতে দেননি অধিনায়ক আকবর আলী। ঠান্ডা মাথায় দলকে টানছিলেন তিনি। যেন ভারতের উইকেটরক্ষক অধিনায়ক এমএস ধোনি। তাকে উইকেট ধরে রেখে সঙ্গ দিচ্ছিলেন স্পিনার রাকিবুল। কিন্তু জয় হতে ১৫ রান দুরে থাকতেই নামে বৃষ্টি। বাংলাদেশের জয়ের জন্য বৃষ্টি আইনে লক্ষ্য নেমে আসে ৩০ বলে ৭ রান। ওই রান তুলতে কোন সমস্যায় পড়তে হয়নি দলের।বৃষ্টির পরে নেমেই রাকিবুল দারুণ এক চার মেরে দলের জয় নিশ্চিত করে ফেলেন। আকবার খেলেন ৪৩ রানের দারুণ এক ইনিংস।
ভারতের হয়ে সেমিফাইনালে সেঞ্চুরির পর ফাইনালেও দুর্দান্ত খেলেছেন দেশটির ওপেনার জ্বসশী জয়সাওয়াল। তিনি খেলেন ৮৮ রানের ইনিংস। এছাড়া তিলক ভার্মার ব্যাট থেকে ৩৮ রান পায় তারা। উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ধ্রুব জুরেল ২২ রান করে আউট হন। ভারতের আর কোন ব্যাটসম্যান দশ রানের কোটায় যেতে পারেননি।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের পেসাররা এ ম্যাচে বাজিমাত করেছেন। স্পিনার হাসান মুরাদের জায়াগায় দলে ঢোকা পেসার অভিষেক দাস তুলে নেন ভারতের তিন উইকেট। ফাইনালে জয়ী ম্যাচের সমন্বয় ভেঙে তাকে কেন দলে নেওয়া হয় সেটার প্রমাণ তিনি দিয়েছেন। এছাড়া অন্য দুই পেসার শরিফুল ইসলাম এবং সাকিব দুটি করে উইকেট নেন। স্পিনার রাকিবুল নেন একটি উইকেট। দারুণ ফিল্ডিং করে ভারতের দুই ব্যাটসম্যানকে রান আউট করে বাংলাদেশ।
৫৪ বলে ১৫ রান দরকার হাতে মাত্র তিন উইকেট। ৪২ রান নিয়ে ক্রিজে অপরাজিত অধিনায়ক আকবর আলি ও ৮ রানে রাকিবুল হাসান। আর তখনই আবহাওয়া পূর্বাভাস মেনে পচেফস্ট্রুমের সেনউইজ পার্কে নামে বৃষ্টি। না হতাশার কিছু নয়, বৃষ্টিতে খেলা ভেসে গেলেও ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে বাংলাদেশই ছিল এগিয়ে। বৃষ্টি অবশ্য থেমেছে কিছুক্ষণ পরই, এক্ষত্রেও লাভটা বাংলাদেশেরই। নতুন লক্ষ্য ৩০ বলে মাত্র ৭।
৪২ তম ওভারের প্রথম বলেই সিঙেল নেন আকবর আলি। সুশান্ত মিশ্রের চতুর্থ বলেই চার মেরে ব্যবধান কমিয়ে নেন রাকিবুল। শেষ বলে সিঙেল নিয়ে স্কোর সমতা করেন রাকিবুলই। স্ট্রাইক ধরে রাখা লেজের এই ব্যাটসম্যানই আথার্ভা অঙ্কলেকারের বলে ডাউন দ্যা ট্র্যাকে এসে উড়িয়ে মারতে চান। বল বাউন্ডারি লাইন না পেরোলেও ততক্ষণে রচিত হয়ে যায় বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায়। ৩ উইকেট হাতে রেখেই যুবাদের সবচেয়ে বড় আসরের শিরোপা জিতে নেয় বাংলাদেশ।
ম্যান অফ দ্যা ফাইনাল- আকবর আলি (বাংলাদেশ), ম্যান অফ দ্যা টুর্নামেন্ট- জয়সওয়াল (ভারত)।